Alienum phaedrum torquatos nec eu, vis detraxit periculis ex, nihil expetendis in mei. Mei an pericula euripidis, hinc partem.

মমতাময় কড়াইল

সোসাইটির সবচেয়ে বড় প্রকল্প ‘মমতাময় কড়াইল’। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে তৃণমূল পর্যায়ে গণমানুষের কাছাকাছি প্যালিয়েটিভ কেয়ারকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কড়াইল বস্তিতে প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে। বার্ধক্য এবং নিরাময় অযোগ্য রোগে আক্রান্ত বয়স্ক মানুষদের ভোগান্তি কমানো ছিলো উদ্দেশ্যে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড হসপিস প্যালিয়েটিভ কেয়ার এলায়েন্স (ডব্লিউএইচপিসিএ) এবং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে সমাজভিত্তিক সম্পৃক্ততায় গড়ে উঠে এই কর্মকান্ড। প্রকল্পের অর্থায়ন এবং সময়কাল শেষ হলে ২০২১ সালে সম্পূর্ন দায়িত্ব গ্রহণ করে পিসিএসবি, যার মূল অর্থের উৎস যাকাত এবং সাধারণ অনুদান। 

বাংলাদেশে বস্তির সংখ্যা প্রায় ১৪,০০০, যেখানে প্রায় ১৮ লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বস্তি ‘কড়াইল’, রাজধানীর অভিজাত গুলশান, বনানীর এলাকার পাশে গড়ে উঠেছে। সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি, তবে স্থানীয় তথ্যসূত্র অনুসারে প্রায় ৪,৫০,০০০ লক্ষ মানুষের বসবাস, এদের মধ্যে ৪০,০০০ শিশু।

বয়স্ক এবং শিশুদের জন্য প্যালিয়েটিভ সেবা কার্যক্রম

সবার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা

প্রতিবন্ধিতায় ভুগছে এমন শিশুদের জন্য রেসপাইট কেয়ার বা ‘আনন্দ প্রোগ্রাম’

সমাজভিত্তিক চক্ষুসেবা

সচেতনতা মূলক কার্যক্রম (উঠান বৈঠক)

চ্যারিটি শপ (আশা)

বয়স্ক প্যালিয়েটিভ সেবা

প্রায় ২০০ বয়স্ক রোগী এই প্রকল্পের অধীনে রয়েছে। শয্যাশায়ী, পক্ষাঘাতগ্রস্থ, বয়স জনিত নানাবিধ ভোগান্তি, ডিমেনশিয়া, সিজোফ্রেনিয়া, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ জনিত জটিলতা, ক্রনিক কিডনি রোগ, হৃদরোগ সংক্রান্ত জটিলতা, লেপরোসি, এবং শারীরিক ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন এমন রোগীরা সেবা পাচ্ছে।

শিশু প্যালিয়েটিভ সেবা

প্রায় ২৫ জন নানাবিধ প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত শিশু এই প্রকল্পের অধীনে রয়েছে। সেরিব্রাল পালসি, জন্মগত ত্রুটি, জেনেটিক সমস্যা, ক্যান্সার সংক্রান্ত জটিলতা ইত্যাদির জন্য ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শিশু এবং তার পরিবার

হোম ভিজিট/ গৃহ সেবা

শয্যাশায়ী রোগীদের (বয়স্ক এবং শিশু) বাসায় গিয়ে নিয়মিত যত্ন নেন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্থানীয় প্যালিয়েটিভ কেয়ার সহকারীরা (পিসিএ), নার্স এবং চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সেই সাথে নার্স, চিকিৎসক সাপ্তাহিক এবং প্রয়োজন অনুযায়ী হোম ভিজিট দিয়ে থাকেন

ঔষধ সহায়তা

শারীরিক ভোগান্তি কমানো, সেই সাথে দীর্ঘমেয়াদি রোগের (যেমন - ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, অ্যাাজমা ইত্যাদি) প্রয়োজনীয় ঔষধ নিয়মিত পেয়ে থাকেন প্রকল্পের রোগীরা

বহির্বিভাগ সেবা (প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা)

সাপ্তাহিক ৩ দিন বহির্বিভাগ সেবা। রোগী এবং স্থানীয় অন্যান্য ব্যক্তিরা নিয়মিত এই সেবা পেয়ে থাকেন। সোসাইটি মনে করে যে কমিউনিটিতে মানুষকে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে বেঁচে থাকার জন্য, সেখানে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের পাশাপাশি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার অন্তর্ভুক্তি জরুরী

মাসিক ফুড ব্যাগ

সামাজিক সহায়তা হিসেবে প্রতি মাসে প্রকল্পের নির্দিষ্ট সংখ্যক রোগী (বয়স্ক এবং শিশু) খাবার পেয়ে থাকেন।

k

ফিজিওথেরাপি

প্রতিবন্ধিতায় ভুগছে (সেরিব্রাল পালসি এবং অন্যান্য কারণে) এমন শিশুরা সপ্তাহে ২ দিন এই সেবা পেয়ে থাকে

শোকসন্তপ্ত পরিবারের যত্ন

প্রিয় মানুষটি চলে যাওয়ার পর পরিবারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন প্যালিয়েটিভ কেয়ার সহকর্মীরা

k

প্রয়োজন ভিত্তিক সেবা

প্রয়াত রোগীদের দাফন কার্যক্রমে সহযোগিতা, কোলস্টমি ব্যাগ, রাবার ক্লথ, রিহেবিল্যাটেশন এর জন্য লাঠি, হুইলচেইয়ার ইত্যাদি সহযোগিতা

সমাজভিত্তিক চক্ষু সেবা কার্যক্রম

প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার সম্প্রসার হিসেবে এই সেবা শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে বিক্ষিপ্তভাবে। বর্তমানে মাসে একদিন প্রকল্পের রোগী এবং কড়াইল কমিউনিটির অন্যান্যরাও সেবা নিচ্ছেন।পাশাপাশি পুনর্বাসন হিসেবে একজন শিশু ঢাকার মিরপুরে ব্রেইল স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেছে।

a

আশা (চ্যারিটি শপ)

২০১৭ সালে শুরু হওয়া চ্যারিটি শপ ‘আশা’র মূল উদ্দেশ্য ছিলো মানুষের মর্যাদা রক্ষা করে সাহায্য করা। প্রয়োজনের তাগিদে বিনামূল্যে জিনিস নিতে গিয়ে কেউ যেন অপ্রকাশিত গ্লানিতে না ভোগেন। সেই সূত্রে পোশাক এবং প্রয়োজনীয় তৈজষপত্র (অনুদান ভিত্তিক) নিয়ে প্রতি শনিবার সেন্টারের উঠানে আশা দোকান খোলা হয়। ক্রেতা নিজে দাম ঠিক করেন এবং কিনে নিয়ে যান প্রয়োজন এবং পছন্দ অনুযায়ী। এই দোকান থেকে প্রাপ্ত অর্থ কড়াইল সেন্টারের অফিস পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়।

d

আনন্দ (রেসপাইট কেয়ার)

২০১৬ সালে শিশুদের প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির ৫ বছর পর যখন শারীরিক কষ্টের কিছুটা উন্নতি হয় তখন শিশু প্রকল্প টিম সিদ্ধান্ত নেয় শিশুদের জীবনের গুণগত মান উন্নয়নের জন্য আরো কিছু করা দরকার। প্রতিবন্ধিতা সংক্রান্ত কুসংস্কার এবং পরিবারের হীনমন্যতা এসব শিশুদের একটি ঘরে, বিছানায় বছরের পর বছর বন্দি করে রাখে। সেই সাথে পরিবারের পরিচর্যাকারী প্রতিনিয়ত সেবা দিতে দিতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। সে সূত্রে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে প্রতি সপ্তাহে একদিন শিশুদের বাসা থেকে সেন্টারে নিয়ে আসেন প্যালিয়েটিভ কেয়ার সহকারি এবং স্বেচ্ছাসেবকরা। সেন্টারে আসার পর ৬ – ৮ ঘন্টা শিশুদের দেখাশোনার (খাওয়ানো, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা) সমস্ত দায়িত্ব সেন্টারের। সেই সাথে খেলাধূলা, স্কুলের অন্য শিশুদের সাথে মিথস্ক্রিয়া এবং ফিজিওথেরাপি দেয়া হয়ে থাকে। এসময় মা-বাবা তাদের নিজেদের কাজ করতে পারেন কিংবা বিশ্রাম নিতে পারেন।

a

উঠান বৈঠক

কড়াইল কমিউনিটির মানুষদের প্যালিয়েটিভ কেয়ার, এর প্রয়োজনীয়তা এবং কমিউনিটি অংশগ্রহণের জন্য প্রতি মাসে একদিন আলোচনা করা হয়।