প্যালিয়েটিভ কেয়ার এমন একটি পদ্ধতি, যা নিরাময় অযোগ্য এবং জীবনসীমিতকারী রোগে আক্রান্ত এবং তাদের পরিবারের জীবনযাত্রার গুণগত মান উন্নত করে। এটি ভোগান্তির প্রাথমিক সনাক্তকরণ, সঠিক মূল্যায়ন এবং শারীরিক, মানসিক বা আধ্যাত্মিক যেকোনো সমস্যার চিকিৎসার মাধ্যমে কষ্ট প্রতিরোধ এবং উপশম করে।
কাদের জন্য প্যালিয়েটিভ সেবা প্রযোজ্য?
ক্যানসার, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, নিউরোলজিক্যাল ডিজিজ (যেমন: মোটর নিউরন ডিজিজ, পারকিনসন) ইত্যাদি জীবনসীমিতকারী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য।
সেরিব্রাল পালসি, জেনেটিক ডিসঅর্ডার এবং অন্যান্য জটিল শারীরিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য।
রোগীর পরিবার ও পরিচর্যাকারীদের মানসিক সহায়তা এবং রোগীর মৃত্যু পরবর্তী সেবা প্রদান
প্যালিয়েটিভ কেয়ার কি অন্যান্য সেবা বন্ধ (যেমন: কেমোথেরাপি বা ডায়ালাইসিস) মৃত্যু কে তরান্বিত করে?
এটি একটি ভূল ধারনা। রোগীর অন্যান্য চিকিৎসার (যেমন: কেমোথেরাপি বা ডায়ালাইসিস) পাশাপাশি প্যালিয়েটিভ কেয়ার সহায়ক হতে পারে। গবেষনা মতে, প্রথমে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের আওতায় রোগীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত এবং ক্যান্সারের রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও তুলনামূলক ভাবে বাড়িয়েসপাতাল
প্যালিয়েটিভ সেবা কি শুধুমাত্র জীবনের শেষ সময়ে প্রদান করা হয়?
না, প্যালিয়েটিভ সেবা রোগ নির্ণয়ের পর যে কোনো পর্যায়েই শুরু করা যেতে পারে। এটি রোগের প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে রোগের উন্নতি বা শেষ সময় পর্যন্ত প্রদান করা হয়। এমনকি রোগী যখন অন্যান্য চিকিৎসা (যেমন: কেমোথেরাপি বা ডায়ালাইসিস) নিচ্ছে, তখনও প্যালিয়েটিভ কেয়ার সহায়ক হতে পারে।
প্যালিয়েটিভ সেবা কি শুধুমাত্র ব্যথা নিরাময়ের জন্য?
না, প্যালিয়েটিভ সেবা শুধু ব্যথা নয়, বরং শারীরিক উপসর্গ (যেমন: শ্বাসকষ্ট, বমি, ক্ষুধামন্দা), মানসিক উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, এবং আধ্যাত্মিক সংকট উপশম করতেও কার্যকরী। এটি রোগী ও পরিবারের সামগ্রিক জীবনমান উন্নত করতে কাজ করে।
সাধারণ চিকিৎসা ব্যবস্থা ও প্যালিয়েটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য কি?
সাধারণ চিকিৎসা ব্যবস্থা রোগ প্রতিরোধ এবং আরোগ্য ভিত্তিক। প্যালিয়েটিভ রোগী ভিত্তিক এবং সেই পরিবারের যন্ত্রণা কমানোর প্রচেষ্টা ভিত্তিক।
আমি এখন একজন চিকিৎসকের অধীনে আছি তিনি কি আমার প্যালিয়েটিভ চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করতে পারবেন?
বর্তমান চিকিৎসক যদি প্যালিয়েটিভ কেয়ার সম্পর্কে সম্যক ধারণা এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হন তবে তিনিই এই সেবা দিতে সক্ষম। অন্যথায় একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্যালিয়েটিভ কেয়ার চিকিৎসকের সহযোগিতা প্রয়োজন। বর্তমানে বাংলাদেশে এমডি কোর্স চালু আছে প্যালিয়েটিভ মেডিসিন এর অধীনে।
বাংলাদেশের কোথায় প্যালিয়েটিভ সেবা প্রদান করা হয়?
সরকারি পর্যায়ে:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা।
খুলনা মেডিকেল কলেজ।
বেসরকারি পর্যায়ে:
বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতাল
হসপিস বাংলাদেশ
প্যালিয়েটিভ কেয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশ (পিসিএসবি) প্রকল্পের মাধ্যমে সমাজভিত্তিক প্যালিয়েটিভ সেবা প্রদান করছে।